জর্দানো ব্রুনো
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পশ্চিমা দর্শন রেনেসাঁ দর্শন |
|
---|---|
নাম: | জর্দানো ব্রুনো |
জন্ম: | ১৫৪৮ |
মৃত্যু: | ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৬০০ |
মতাদর্শ ধারা: | ? |
প্রধান আগ্রহ: | দর্শন এবং বিশ্বতত্ত্ব |
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন: | নিকোলাস কোপার্নিকাস, Nicolaus Cusanus, Marsilo Ficino, Ramon Llull, Pico della Mirandola, Giulio Camillo |
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন: | Nicola Antonio Stigliola, Gottfried Wilhelm Leibniz, Baruch Spinoza, James Joyce, Umberto Eco, Giorgio Agamben |
জর্দানো ব্রুনো (১৫৪৮–১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৬০০) একজন ইতালীয় দার্শনিক, ধর্মযাজক, বিশ্বতত্ত্ব বিশারদ এবং ওকাল্টিস্ট (গূঢ় রহস্যাদিতে বিশ্বাসী ব্যক্তি)। ব্রুনো তার স্মৃতিবর্ধন পদ্ধতির জন্য বিখ্যাত যা সংগঠিত জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহাবিশ্ব সম্পূর্ণ সুষম এবং অসীম নয় তার প্রাথমিক প্রস্তাবকদের মধ্যে তিনি একজন। প্রচলিত ধর্মের বিরোধিতার (heresy) অপরাধে তাকে পুড়িয়ে মারা হয়। এজন্য অনেকে তাকে চিন্তার মুক্তির জন্য নিবেদিত একজন শহীদ হিসেবে গণ্য করে থাকেন।[১]
[সম্পাদনা] প্রাথমিক জীবন
জিওর্দানো ব্রুনো ১৫৪৮ সালে ইতালির ভিসুভিয়াস পর্বতমালার অদূরে "নোলা" নামক ছোট্ট এক শহরে জন্মহণ করেন। তার জন্মের সময়টা এমন ছিল যে, মধ্যযুগের ধর্মীয় ও দার্শনিক প্রতিক্রিয়াশীলতাও শেষ হয়নি আবার যুক্তিভিত্তিক আধুনিক যুগেরও সূচনা ঘটেনি। সে হিসেবে তার জন্ম এক মহা সন্ধিক্ষণে। সে সময়ের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের সমন্বয় ঘটেনি। এ কারণে দর্শনচ্যুত বিজ্ঞান বা বিজ্ঞানচ্যুত দর্শনের অন্ধকার যুগ বিরাজ করছিল। এমন সময়েই বিপ্লবী মতবাদ নিয়ে উপস্থিত হন ব্রুনো। উল্লেখ্য ব্রুনোর জন্মস্থান ইতালিতেই ১৩৫০ সাল থেকে ইউরোপীয় পুনর্জাগরণ তথা রেনেসাঁ শুরু হয়েছিল। ব্রুনোর জন্মের সময়ে আরও একটি বিষয় চোখে পড়ে। সে সময় রাজার সাথে গীর্জার বিরোধ খুব একটা জমে উঠেনি এবং পার্লামেন্টের সাথে রাজার বিরোধের সূচনাই হয়নি। প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মের উত্থান ঘটছিল এবং ক্যাথলিক চার্চ সমাজে নিজেদের প্রভাব রক্ষার করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল।
ব্রুনোর বাবা "জিওভানি ব্রুনো" সৈনিক ছিলেন। অবশ্য ব্রুনোর আলোচনায় পরিবারের বিষয় খুব একটা আসে না। কারণ সারা জীবন তিনি ভবঘুরের মত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেরিয়েছেন। কখনও পরিবারকেন্দ্রিক জীবন যাপনের কোন চেষ্টা করেননি। আরেকটি বড় কারণ পালিয়ে বেড়ানো। সারা জীবনই তাকে প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠী থেকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। ইউরোপের দেশে দেশে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন। তবে ব্রুনো বিজ্ঞান, দর্শন এবং যুক্তিবাদ নিয়ে এমন সব চিন্তা করেছিলেন যা বিংশ শতাব্দীতে এসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এজন্যই বলা হয়, ব্রুনো অসময়ে জন্ম নিয়েছিলেন, তার জন্ম আরও অনেক পরে হওয়া উচিত ছিল।
বয়স ১৩ বছর হওয়ার পর ব্রুনো নেপ্ল্সের সেন্ট ডোমিনিকান স্কুলে ভর্তি হন। পরবর্তী ১০ বছর এই বিখ্যাত স্কুলেই পড়াশোনা করেন। সেন্ট টমাস একুইনাস ডোমিনিকান গোত্রের মানুষ ছিলেন এবং এই স্কুলেই শিক্ষকতা করতেন। একুইনাসের প্রভাব অস্বীকার করতে পারেননি ব্রুনো এবং অচিরেই তিনি ডোমিনিকান ধর্মযাজক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। শপথ গ্রহণের পাশাপাশি "জিওর্দানো" উপাধিটিও গ্রহণ করেন।