গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য (১৭৯৯ - ৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৯) ঊনবিংশ শতকের একজন সাংবাদিক, সম্পাদক এবং লেখক ছিলেন । তিনি ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং কিছুদিন তার সভাপতি ছিলেন ।
তাঁর পিতার নাম জগন্নাথ ভট্টাচার্য । তাঁর খর্ব আকৃতির জন্য তিনি গুড়গুড়ে ভট্চাজ নামে পরিচিত ছিলেন । [১] ছোটবেলায় বাপ মা মারা যাওয়ার পর তিনি নৈহাটিতে নীলমণি ন্যায়পঞ্চাননের চতুষ্পাঠীতে শিক্ষালাভ করেছিলেন । তাঁর সংস্কৃতে পাণ্ডিত্যের জন্য খ্যাতি ছিল ।
কলকাতায় আসার পর তাড়াতাড়ি সাংবাদিক হিসাবে প্রতিষ্ঠা পান । ইয়ং বেঙ্গলের মুখপত্র জ্ঞানান্বেষণ পত্রিকার কার্যত সম্পাদক, সম্বাদ ভাস্কর এবং সম্বাদ রসরাজ পত্রিকার পরিচালক ও হিন্দুরত্ন কমলাকর পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন । তিনি সম্বাদ রসরাজ পত্রিকা দ্বারা ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের পাষণ্ড পীড়ন পত্রিকার সঙ্গে তর্কযুদ্ধে নামতেন । এই সমস্ত পত্রিকা সম্পাদনা করে তিনি অসাধারন খ্যাতি অর্জন করেছিলেন । কিন্তু অশ্লীল রচনা এবং ব্যক্তিগত আক্রমনাত্ম নিবন্ধ প্রকাশের জন্য তাঁর অর্থদণ্ড ও একাধিকবার কারাবাসও ঘটেছিল । তিনি রাজা রামমোহন রায়ের ব্রাহ্মসভা ছেড়ে রাধাকান্ত দেবের ধর্মসভায় যোগ দিলেও রক্ষণশীল ছিলেন না । [১]
গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য তীব্র শ্লেষাত্মক (কখনো কখনো অশ্লীল) রসরচনার মাধ্যমে স্বজাতীয় ইংরেজ নকলনবিস এবং বিদেশী দুর্নীতিপরায়ন শাসকদের আক্রমন করতেন । তিনি সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে এবং বিধবা-বিবাহের পক্ষে লেখালেখি করেছিলেন । তৎকালীন সময়ের আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় ও বর্ধমানের বিধবা রাণী বসন্তকুমারীর রেজিস্ট্রি বিবাহে সাক্ষী ছিলেন । [১]
তাঁর রচিত ও সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য - ভগবদ্গীতা, জ্ঞানপ্রদীপ, ভূগোলসার, নীতিরত্ন, কাশীরাম দাসের মহাভারত প্রভৃতি ।