গোলাম আযম
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গোলাম আযম (জন্ম নভেম্বর ৭,১৯২২) বাংলাদেশে বসবাসরত একজন রাজনৈতিক নেতা, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য যার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] বাল্য ও স্কুল জীবন
[সম্পাদনা] পারিবারিক পরিচিতি
গোলাম আযমের পিতার নাম মাওলানা গোলাম কবির। মাতার নাম সাইয়েদা আশরাফুন্নিসা।
[সম্পাদনা] জন্ম
গোলাম আযম ১৯২২ সালের ৭ নভেম্বর (বাংলা ১৩২৯ সালের ৫ই অগ্রহায়ন) ঢাকা শহরের লক্ষীবাজারস্থ শাহ সাহেব বাড়িতে(তাঁর মাতুলালয়ে) জন্মগ্রহণ করেন।
[সম্পাদনা] শৈশব
[সম্পাদনা] শিক্ষা
১৯৩৭ সালে জুনিয়র মাদ্রাসা পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। এস. এস. সি. পরীক্ষায় মেধা তালিকায় গোলাম আযম ত্রয়োদশ স্থান লাভ করেন। ১৯৪৪ সালে ইসলামিক ইন্টারভিউ কলেজ থেকে আই এ পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে ঢাকা বোর্ডে দশম স্থান অধিকার করেন। ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের কাজে জড়িয়ে পড়ায় গোলাম আযম পরীক্ষা দিতে পারেননি এবং ১৯৪৯ সালে দাঙ্গাজনিত উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে তিনি ১৯৫০ সালে এম. এ পরীক্ষা দেন। ঐ বছর কেউ প্রথম বিভাগ পায়নি। চারজন ছাত্র উচ্চতর দ্বিতীয় বিভাগ লাভ করেন এবং গোলাম আযম তাদের একজন।
[সম্পাদনা] রাজনীতিতে প্রবেশ
[সম্পাদনা] জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান
১৯৫৪ সালের এপ্রিলে জামায়াতে ইসলামীতে সহযোগী (মুত্তাফিক) হিসেবে যোগদান করার পর ১৯৫৫ সালে গ্রেফতার হয়ে রংপুর কারাগারে অবস্থানকালেই জামায়াতের রুকন হন। ১৯৫৫ সালের জুন মাসে তিনি রাজশাহী বিভাগীয় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী নিযুক্ত হন। এর এক বছর পর তাঁকে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী এবং রাজশাহী বিভাগীয় আমীরের দায়িত্ব গ্রহন করেন। ১৯৫৭ সালের অক্টোবর মাসে গোলাম আযমকে তদানীন্তন পূর্ব পাক জামায়াতের জেনারেল সেক্রেটারী নিযুক্ত করা হয়। একাদিক্রমে এক যুগ তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ সালের শেষ দিকে তাঁর উপর পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমীরের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।
[সম্পাদনা] ১৯৭১ সালের রাজনৈতিক ভূমিকা
১৯৭১ সালে গোলাম আযম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তীব্র বিরোধিতা করেন। তাঁর দল জামায়াতে ইসলামীও একই মত ও পথ অনুসরণ করে। ২৫ শে মার্চ রাতে সংঘটিত অপারেশন সার্চলাইট এর ছয় দিন পর গোলাম আযম ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে একটি ভাষণ দেন। এ ভাষণে তিনি ভারতের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, " ভারত সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ করে কার্যত পূর্ব পাকিস্তানীদের দেশপ্রেমকে চ্যালেঞ্জ করেছে।...আমি বিশ্বাস করি যে, এই অনুপ্রবেশকারীরা পূর্ব পাকিস্তানী মুসলমানদের নিকট হেত কোন প্রকার সাহায্য পাবে না। সূত্র: দৈনিক সংগ্রাম, ৭ এপ্রিল ১৯৭১।
গোলাম আযম মুক্তিযুদ্ধের শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিরোধিতাই করেননি বরং তিনি এবং তাঁর দল জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে রাজাকার, আলবদর, আলশামস্ প্রভৃতি বাহিনী গড়ে তোলেন। এরা পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে কাজ করে। এরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সারা দেশে হত্যা, লুন্ঠন এবং বাঙালি নারী ধর্ষণে লিপ্ত ছিল।
৩০শে জুন লাহোরে সাংবাদিকদের কাছে গোলাম আযম বলেন, "তাঁর দল পূর্ব পাকিস্তানে দুস্কৃতকারীদের(মুক্তিযোদ্ধা) তৎপরতা দমন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে এবং এ কারনেই দুস্কৃতকারীদের হাতে বহু জামায়াত কর্মী নিহত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষার উদ্দেশ্য ঢাকায় শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। এর সদস্য ছিলেন পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বরা। গোলাম আযম ও এই কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৭১ সালের ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংগ্রাম এ গোলাম আযমের পশ্চিম পাকিস্তান সফরকালের একটি সাক্ষাৎকারের পূর্ণ বিবরণ দুই কিস্তিতে ছাপা হয়। এই সাক্ষাতকারে তিনি মুক্তিবাহিনীর সাথে তার দলের সদ্স্যদের সংঘর্ষের বিভিন্ন বিবরণ ও পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থতির ওপর মন্তব্য করেন। তিনি বলেন বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জামায়াতকে মনে করতো পহেলা নম্বরের দুশমন। তারা তালিকা তৈরী করেছে এবং জামায়াতের লোকদের বেছে বেছে হত্যা করছে, তাদের বাড়িঘর লুট করছে জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং দিচ্ছে। এতদসত্বেও জামায়াত কর্মীরা রেজাকারে ভর্তি হয়ে দেশের প্রতিরক্ষায় বাধ্য। কেননা তারা জানে 'বাংলা দেশে' ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য কোন স্থান হতে পারে না। জামায়াত কর্মীরা শহীদ হতে পারে কিন্তু পরিবর্তিত হতে পারে না। (দৈনিক সংগ্রাম ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১)
[সম্পাদনা] নাগরিকত্ত্ব বাতিল
১৯৭৩ সালের ১৮ই এপ্রিল সরকারী এক আদেশে আরো ৩৮ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে গোলাম আযমকেও বাংলাদেশের নাগরিক হবার অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়।
[সম্পাদনা] দেশে প্রত্যাবর্তন
[সম্পাদনা] বহিঃসংযোগ
- গোলাম আযমের আত্মজীবনী - "জীবনে যা দেখলাম" ১ম খণ্ড, *২য় খণ্ড, *৩য় খণ্ড
- http://nybangla.com/Muktijoddho/G_Azam/Golam-Azam_1971.pdf