উভচর প্রাণী
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সাধারণত সেই সব প্রাণীদেরকে উভচর প্রাণী (ইংরেজি ভাষায়: Amphibian) বলা হয় যাদের ত্বক চুলহীন ও ভেজা থাকে এবং এই ত্বকের মধ্য দিয়ে পানি দেহের ভেতরে-বাইরে আসা-যাওয়া করতে পারে। প্রায় সব উভচর প্রাণীই তাদের জীবনের প্রথম অংশ পানিতে কাটায় এবং পরবর্তী জীবন স্থলে অতিবাহিত করে। এই দ্বৈত জীবনযাপনের কারণেই এদের নাম দেয়া হয়েছে উভচর। এদের ইংরেজি নাম amphibian গ্রিক শব্দ amphi অর্থাৎ উভয় এবং bios অর্থাৎ জীবন থেকে এসেছে।
উভচর প্রাণীরাই ছিল প্রথম মেরুদণ্ডী প্রাণী যারা অভিযোজনের মাধ্যমে স্থলে বসবাস করে শুরু করে। এরা সরীসৃপদের পূর্বপুরুষ, যেগুলি আবার পাখি ও স্তন্যপায়ীদের পূর্বপুরুষ।
সমস্ত উভচর প্রাণীকে তিনটি মূল বর্গে ভাগ করা যায়:
- কাউডাটা বা লেজযুক্ত উভচর; এদের মধ্যে আছে সাইরেন, সালামান্ডার, ও নিউট।
- অ্যানুরা বা লেজবিহীন উভচর; এদের মধ্যে আছে বিভিন্ন জাতের ব্যাঙ।
- জিম্নোফিওনা; এরা অনেকটা কেঁচোসদৃশ, যেমন সিসিলিয়ান।
বিজ্ঞানীরা প্রায় ৬,০০০ প্রজাতির উভচর প্রাণীর দেখা পেয়েছেন। এদের মধ্যে ব্যাঙের প্রজাতির সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি; এ পর্যন্ত প্রায় ৫৩৬২ প্রজাতির ব্যাঙ আবিষ্কৃত হয়েছে। Frog–জাতীয় ব্যাঙদের ত্বক সাধারণত মসৃণ ও এদের হাত-পা লম্বা। আর Toad-জাতীয় ব্যাঙের ত্বক অমসৃণ, গ্রন্থিময় এবং এদের হাত-পা ছোট ছোট।
ব্যাঙের বাইরে অন্যান্য উভচরদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রজাতি আছে সালামান্ডার নামের প্রাণীর। এদের প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ৫৫৬। এই শ্রেণীর উভচরদের দেহ সরু ও লম্বা এবং লেজযুক্ত।
সবচেয়ে কম সংখ্যক প্রজাতির উভচর হল সিসিলিয়ান জাতের উভচর। এদের প্রজাতির সংখ্যা ১৭৩। এদের কোন হাত-পা নেই, তাই এরা দেখতে অনেকটা কেঁচোর মত। এদের বেশির ভাগই ভূ-তলদেশে মাটি খুঁড়ে বসবাস করে, তবে এদের কিছু কিছু প্রজাতি পানিতেও থাকে।