বাংলা ভাষা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এই প্রবন্ধটি বাংলা ভাষা বিষয়ক। বাংলা লিপি সম্বন্ধে জানতে চাইলে বাংলা লিপি প্রবন্ধটি দেখুন।
বাংলা | ||
---|---|---|
যেসব রাষ্ট্রে প্রচলিত: | বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য কিছু দেশ | |
অঞ্চল: | দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাঞ্চল | |
মোট ভাষাভাষী সংখ্যা: | আনুমানিক ২৩ কোটি ২০ লক্ষ | |
ক্রম: | ৪-৭ (মাতৃভাষাভাষীর সংখ্যা অনুযায়ী; বিভিন্ন অনুমান)[১] | |
ভাষা পরিবার: | ইন্দো-ইউরোপীয় ইন্দো-ইরানীয় ইন্দো-আর্য মাগধী প্রাকৃত অপভ্রংশ অবহট্ঠ বাংলা-অসমীয়া বাংলা |
|
লিপি: | বাংলা লিপি | |
প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা | ||
যেসব দেশের রাষ্ট্রভাষা: | বাংলাদেশ, ভারত এবং ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা | |
নিয়ন্ত্রক সংস্থা: | বাংলা একাডেমী (বাংলাদেশ) পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি (পশ্চিমবঙ্গ) |
|
ভাষা কোডসমূহ | ||
ISO 639-1: | bn | |
ISO 639-2: | ben | |
ISO/FDIS 639-3: | ben | |
|
||
দ্রষ্টব্য: এই পাতায় ইউনিকোড-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক লিপি ব্যবহৃত হয়েছে। |
বাংলা দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বপ্রান্তের একটি ইন্দো-আর্য ভাষা। সংস্কৃত, পালি ও প্রাকৃত ভাষার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে।
বাংলা দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বে অবস্থিত বঙ্গ বা বাংলা নামক অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষা। এ অঞ্চলটি বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ ও ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে গঠিত। প্রায় ২০ কোটি মানুষের মাতৃভাষা বাংলা বিশ্বের বহুল প্রচলিত ভাষাগুলোর মধ্যে একটি (ভাষাভাষীর সংখ্যানুসারে এর অবস্থান চতুর্থ থেকে সপ্তমের মধ্যে [১])। বাংলা বাংলাদেশের প্রধান ভাষা; ভারতে বাংলা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কথিত ভাষা [২][৩]। অসমীয়া ও বাংলা ভৌগলিকভাবে সবচেয়ে পূর্বে অবস্থিত ইন্দো-ইরানীয় ভাষা।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] ইতিহাস
খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাদের শেষ প্রান্তে এসে মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষাগুলোর বিভিন্ন অপভ্রংশ থেকে যে আধুনিক ভারতীয় ভাষাগুলোর উদ্ভব ঘটে, তাদের মধ্যে বাংলা একটি [৪]। কোন কোন ভাষাবিদ তারও অনেক আগে, ৫০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে, বাংলার জন্ম হয় বলে মত পোষণ করেন [৫] তবে এ ভাষাটি তখনো কোন সুস্থির রূপ ধারণ করেনি; সে সময় এর বিভিন্ন লিখিত ও ঔপভাষিক রূপ পাশাপাশি বিদ্যমান ছিল। যেমন ধারণা করা হয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীর দিকে মাগধি অপভ্রংশ থেকে মাগধি অবহট্ঠের উদ্ভব ঘটে। এই অবহট্ঠ ও বাংলা কিছু সময় ধরে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ছিল। [৬]
বাংলা ভাষার ইতিহাসকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়:[৪]
- প্রাচীন বাংলা (৯০০/১০০০ খ্রিস্টাব্দ – ১৪০০ খ্রিস্টাব্দ) — লিখিত নিদর্শনের মধ্যে আছে চর্যাপদ, ভক্তিমূলক গান; আমি, তুমি, ইত্যাদি সর্বনামের আবির্ভাব; ক্রিয়াবিভক্তি -ইলা, -ইবা, ইত্যাদি। ওড়িয়া ও অসমীয়া এই পর্বে বাংলা থেকে আলাদা হয়ে যায়।
- মধ্য বাংলা (১৪০০–১৮০০ খ্রিস্টাব্দ) — এ সময়কার গুরুত্বপূর্ণ লিখিত নিদর্শন চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন; শব্দের শেষে “অ” ধ্বনির বিলোপ; যৌগিক ক্রিয়ার প্রচলন; ফার্সি প্রভাব। কোন কোন ভাষাবিদ এই যুগকে আদি ও অন্ত্য এই দুই ভাগে ভাগ করেন।
- আধুনিক বাংলা (১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে) — ক্রিয়া ও সর্বনামের সংক্ষেপন (যেমন তাহার → তার; করিয়াছিল → করেছিল)।
বাংলা ভাষা ঐতিহাসিকভাবে পালির সাথে বেশি সম্পর্কিত হলেও মধ্য বাংলায় (চৈতন্য যুগে) ও আধুনিক রেনেসাঁসের সময় বাংলার ওপর সংস্কৃত ভাষার প্রভাব বৃদ্ধি পায়। দক্ষিণ এশিয়ার আধুনিক ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলা ও মারাঠির শব্দভাণ্ডারে প্রচুর সংস্কৃত শব্দ রয়েছে; অন্যদিকে হিন্দি ও অন্যান্য ভাষাগুলো আরবি ও ফার্সি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।
১৮শ শতকের পূর্বে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ রচনার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। পর্তুগিজ মিশনারি পাদ্রি মানোএল দা আসসুম্পসাঁউ Vocabolario em idioma Bengalla, e Portuguez dividido em duas partes নামে বাংলা ভাষার প্রথম অভিধান/ব্যাকরণ রচনা করেন; ১৭৩৪ থেকে ১৭৪২ সাল পর্যন্ত ভাওয়ালে কর্মরত অবস্থায় তিনি এটি লিখেছিলেন। [৭] ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হালহেড নামের এক ইংরেজ প্রাচ্যবিদ বাংলার একটি আধুনিক ব্যাকরণ লেখেন, (A Grammar of the Bengal Language (১৭৭৮)) যেটি ছাপাখানার হরফ (type) ব্যবহার করে প্রকাশিত সর্বপ্রথম বাংলা গ্রন্থ। [৮] বাঙালিদের মধ্যে রাজা রামমোহন রায় ছিলেন প্রথম ব্যাকরণ রচয়িতা; তাঁর গ্রন্থের নাম "Grammar of the Bengali Language" (১৮৩২)। এ সময়ে ক্রমশ সাধুভাষা থেকে সহজতর চলিতভাষার প্রচলন বাড়তে থাকে।.[৯]
১৯৫১–৫২ সালের পূর্ব পাকিস্তানের (এখনকার বাংলাদেশ) "ভাষা আন্দোলনের" ভিত্তি ছিল বাংলা ভাষা। [১০] পাকিস্তানের গরিষ্ঠসংখ্যক মানুষ বাংলাভাষী হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র উর্দু ভাষাকেই সাংবিধানিক ভাবে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন।
[সম্পাদনা] ভৌগলিক বিস্তার
পূর্বাঞ্চলীয় দক্ষিণ এশিয়ার বঙ্গ বা বাংলা নামের অঞ্চলের লোকদের মাতৃভাষা। এ অঞ্চলটি বর্তমানে ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের সমন্বয়ে গঠিত। বাংলাদেশের প্রায় ৯৮% মানুষের মাতৃভাষা বাংলা। [১১] এছাড়া মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া ও পাশ্চাত্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাভাষী বাস করেন।
[সম্পাদনা] নমুনা
- একটি বাংলা কবিতা (file info) — play in browser (beta)
- শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা অবনী বাড়ি আছো কবিতা, একজন পুরুষ বাংলা মাতৃভাষীর কন্ঠে
- Problems listening to the file? See media help.
[সম্পাদনা] আরও দেখুন
|
---|
ব্যাকরণ • ধ্বনিতত্ত্ব • শব্দভাণ্ডার • উপভাষাসমূহ • যুক্তাক্ষরসমূহ • লিপি • সাহিত্য • ভাষা আন্দোলন • আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস |
[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র
- ↑ ১.০ ১.১ The World's Most Widely Spoken Languages. Saint Ignatius High School (February 6, 2001). Retrieved on 2206-11-17.
- ↑ Gordon, Raymond G., Jr. (ed. (2005). Languages of India. Ethnologue: Languages of the World, Fifteenth edition.. SIL International. Retrieved on 2006-11-17.
- ↑ Languages in Descending Order of Strength - India, States and Union Territories - 1991 Census. Census Data Online 1. Office of the Registrar General, India. Retrieved on 2006-11-19.
- ↑ ৪.০ ৪.১ (Bhattacharya 2000)
- ↑ (Sen 1996)
- ↑ Abahattha in Asiatic Society of Bangladesh 2003
- ↑ Rahman, Aminur. Grammar. Banglapedia. Asiatic Society of Bangladesh. Retrieved on 2006-11-19.
- ↑ Bangla language in Asiatic Society of Bangladesh 2003
- ↑ Ray, S Kumar. The Bengali Language and Translation. Translation Articles. Kwintessential. Retrieved on 2006-11-19.
- ↑ (Baxter 1997, pp. 62-63)
- ↑ The World Fact Book. CIA. Retrieved on 2006-11-04.
[সম্পাদনা] গ্রন্থ ও রচনাপঞ্জি
|
|
|
|
---|---|
কেন্দ্রীয় সরকার পর্যায়ের সরকারী ভাষাসমূহ | আদর্শ হিন্দি • ইংরেজি |
রাজ্য পর্যায়ের সরকারী ভাষাসমূহ | অসমীয়া • বাংলা • বোড়ো • দোগরি • গারো • গুজরাটি • হিন্দি • কন্নড় • কাশ্মিরী • খাসি • ককবরক • কঙ্কনি • মৈথিলি • মালয়ালম • মেইতেই • মারাঠি • মিজো •নেপালি • ওড়িয়া • পাঞ্জাবি • সংস্কৃত • সাঁওতালি • সিন্ধি • তামিল • তেলুগু • উর্দু |