মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
একটি এলাকার মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা সামষ্টিক অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি হচ্ছে সে এলাকার অর্থনীতির আকার পরিমাপের একটি পদ্ধতি। একটি দেশের জিডিপি বলতে বোঝায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেশের ভিতরে উৎপাদিত পণ্য ও সেবার মোট বাজারমূল্য। একে উৎপাদনের বিভিন্ন ধাপে পণ্য ও সেবার উপর সংযোজিত মূল্যের সমষ্টি হিসেবেও দেখা হয়। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে জিএনপি বা মোট জাতীয় উৎপাদন অর্থনীতি পরিমাপক হিসেবে ব্যবহৃত হত। জিডিপি এবং জিএনপি প্রায় সমার্থক, তবে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। জিডিপি একটি এলাকা নিয়ে চিন্তা করে যেখানে পণ্য বা সেবা উৎপাদিত হয়। অন্যদিকে জিএনপি (বা জিএনআই, স্থুল জাতীয় আয়) একটি অঞ্চলের উদ্ভূত আয় নিয়ে চিন্তা করে।
জিডিপি পরিমাপ ও বোঝার সবচেয়ে সাধারন উপায় হচ্ছে ব্যয় পদ্ধতি:
- জিডিপি = ভোগ + বিনিয়োগ + (সরকারী ব্যয়) + (রপ্তানি − আমদানি)
"গ্রোস" বা মোট বলতে বোঝাচ্ছে মূলধনী মজুতের ওপর অবচয় গণনায় ধরা হয়নি। অবচয় হিসেব করলে এবং নীট বিনিয়োগ ধরলে পাওয়া যাবে নীট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন। এই সমীকরণের ভোগ ও বিনিয়োগ হচ্ছে চূড়ান্ত পণ্যের উপর ব্যয়। সমীকরণের রপ্তানি থেকে আমদানি বিয়োগের অংশটি (ক্রমসঞ্চয় রপ্তানি নামেও ডাকা হয়) এরপর এই ব্যয়ের যে অংশটি দেশে উৎপাদিত হয়নি তার সমতা রক্ষা করে।
অর্থনীতিবিদগণ সাধারন ভোগকে দুভাগে ভাগ করেছেন; ব্যক্তিগত ভোগ এবং সরকারী খাত। তাত্ত্বিক সমষ্টিকেন্দ্রিক অর্থবিদ্যা অনুসারে ভোগকে দুই ভাগে বিভক্তের সুবিধা হচ্ছে:
- ব্যক্তিগত ভোগ কল্যাণ অর্থশাস্ত্রের আলোচনার বিষয়। অর্থনীতিতে ব্যক্তিগত বিনিয়োগ এবং বাণিজ্যের ফলে দীর্ঘ মেয়াদী ব্যক্তিগত ভোগ বৃদ্ধি পায়।
- এর ফলে ব্যক্তিগত ভোগকে অভ্যন্তরীণ, সরকারী খাতকে বাহ্যিক বিবেচনা করা যায়। তাই সমষ্টিগত অর্থনীতিতে এর প্রয়োগ যথার্থ হয়।.