জীবনানন্দ দাশ
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯, বরিশাল - অক্টোবর ২২, ১৯৫৪, বাংলা ৬ই ফাল্গুন, ১৩০৫) একজন প্রতিভাবান বাঙালি কবি। তাঁর পিতা সত্যানন্দ দাশ, মাতা কুসুমকুমারী দাশ। বাবা সত্যানন্দ দাশ (১৮৬৩-১৯৪২) ছিলেন স্কুল শিক্ষক, পত্রিকা সম্পাদক এবং প্রবন্ধকার। মা কুসুমকুমারী দাশ (১৮৮২-১৯৪৮) কবিতা লিখতেন। তিনি ছিলেন পরিবারের বড় ছেলে, তার ছোট ভাই অশোকানন্দ এবং বোন সুচরিতা। তিনি শিক্ষালাভ করেন প্রথমে বরিশাল ব্রজমোহন স্কুলে ও ব্রজমোহন কলেজে, পরে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী সাহিত্যে ১৯২১ সালে এম. এ. ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৩০ সালে শ্রীমতী লাবন্য গুহকে বিবাহ করেন। তাঁদের দুটি সন্তান। ১৯৩১ সালে কন্যা শ্রীমতী মঞ্জুশ্রী এবং ১৯৩৮ সালে পুত্র শ্রী সমরানন্দের জন্ম হয়।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] কর্মজীবন
অধ্যাপনার কাজে তাঁর কর্মজীবনের শুরু ও সমাপ্তি। আইন নিয়ে পড়ালেখা করতে করতে তিনি কলকাতা সিটি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। মাঝখানে কিছুদিনের জন্য কলকাতার একটি দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য বিভাগের সম্পাদনায় নিযুক্ত ছিলেন। অধ্যাপনা করেছেন বর্তমান বাংলাদেশ ও ভারতের অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। (সিটি কলেজ, কলকাতা, ১৯২২-১৯২৮; বাগেরহাট কলেজ, খুলনা (১৯২৯), রামযশ কলেজ, দিল্লী, ১৯৩০-১৯৩১; ব্রজমোহন কলেজ, বরিশাল, ১৯৩৫-১৯৪৮; খড়গপুর কলেজ, ১৯৫১-১৯৫২; বারিষা কলেজ, ১৯৫৩; হাওড়া গার্লস কলেজ, কলকাতা, ১৯৫৩-১৯৫৪)।
মাঝখানে একটি দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক এবং ইন্সুরেন্স কোম্পানীর এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন। ব্যাবসার চেষ্টাও করেছিলেন, বছরখানেক এর জন্য।
[সম্পাদনা] সাহিত্যধারা
১৯১৯ সালে তার লেখা একটি কবিতা প্রথম প্রকাশিত হয়। তখন তিনি জীবনানন্দ দাশগুপ্ত নামে লিখতেন। ১৯২৭ সাল থেকে তিনি জীবনানন্দ দাশ নামে লিখতে শুরু করেন। বেঁচে থাকা অবস্থায় তার ৭টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় এবং কবি হিসাবে তিনি তার সময়কালে পরিচিত ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষায় আধুনিক কবিতার পথিকৃতদের একজন। জীবনানন্দ দাশ এর জীবন এবং কবিতার উপর প্রচুর গ্রন্থ লেখা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে, বাংলা ভাষায়। এর বাইরে ইংরেজীতে তার উপর লিখেছেন, ক্লিনটন বি সিলি, এ পোয়েট এর্পাট নামে। ইংরেজী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় তার কবিতা অনুদিত হয়েছে বলে জানা নাই।
[সম্পাদনা] গ্রন্থতালিকা
[সম্পাদনা] কাব্যগ্রন্থ
- ঝরা পালক (১৯২৮)
- ধুসর পাণ্ডুলিপি (১৯৩৬)
- বনলতা সেন (১৯৪২)
- মহাপৃথিবী (১৯৪৪)
- সাতটি তারার তিমির (১৯৪৮)
- শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৫৪)
- রূপসী বাংলা (১৯৫৭)
- বেলা অবেলা কালবেলা (১৯৬১)
- আলো পৃথিবী (১৩৮৯ বাংলা)
[সম্পাদনা] প্রবন্ধগ্রন্থ
- কবিতার কথা (১৯৫৫)
বনলতা সেন (১৯৪২)
[সম্পাদনা] গল্প ও উপন্যাস
- জীবনানন্দ দাশের গল্প (১৩৭৯ বাংলা)
- সুতীর্থ
- মাল্যবান (১৯৭৩)
[সম্পাদনা] পুরস্কার
বনলতা সেন (১৯৫২) নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলন কর্তৃক এবং জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৫৪) ভারত রাষ্ট্র কতৃক শ্রেষ্ঠ বাংলা বই এর তালিকায় পুরস্কৃত হয় বলে জানা যায়।
[সম্পাদনা] মৃত্যু
১৪ই অক্টোবর, ১৯৫৪ তারিখে কলকাতার বালিগঞ্জে এক ট্রাম দুর্ঘটনায় তিনি আহত হন। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২২শে অক্টোবর, ১৯৫৪ তারিখে রাত্রি ১১ টা ৩৫ মিনিটে কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ধারণা করা হয় আত্মহত্যাস্পৃহা ছিল দুর্ঘটনার মূল কারণ[১]।
[সম্পাদনা] পাদটীকা
- ↑ হুমায়ুন আজাদ সম্পাদিত আধুনিক বাঙলা কবিতা ISBN 984-901-205-1.