চট্টগ্রাম
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর | বন্দরনগরী নামে পরিচিত। এটি দক্ষিন-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসাবে পরিচিত চট্টগ্রাম শহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়াও অনেক গুলো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] সীমারেখা
[সম্পাদনা] প্রশাসনিক অঞ্চল
চট্টগ্রাম শহর এলাকা ৮টি থানার অধীনঃ চাঁদগাও,বায়জীদ বোস্তামী, বন্দর, ডাবলমুরিং, কোতোয়ালী, পাহাড়তলী, পাঁচলাইশ, এবং নবগঠিত হালিশহর থানা।
চট্টগ্রাম শহরে রয়েছে ৬৮টি ওয়ার্ড, এবং ২৩৬টি মহল্লা। শহরের মোট এলাকা হলো ২০৯.৬৬ বর্গ কিলোমিটার। [১]
[সম্পাদনা] নগর প্রশাসন
চট্টগ্রাম শহর এলাকা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-এর অধীনস্ত। শহরবাসীদের সরাসরি ভোটে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। বর্তমানে এই শহরের মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী। শহরের আইন-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য নিযুক্ত রয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর সদর দপ্তর দামপাড়ায় অবস্থিত। চট্টগ্রামের প্রধান আদালতের স্থান লালদীঘি ও কোতোয়ালী এলাকায় ঐতিহাসিক কোর্ট বিল্ডিং এ।
[সম্পাদনা] অর্থনীতি
বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো চট্টগ্রামের অর্থনীতিও কৃষি ও বাণিজ্য নির্ভর। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বানিজ্যিক রাজধানী। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের প্রথম রপ্তানী প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল বা EPZ চট্টগ্রামে স্থাপিত হয়।[১]
[সম্পাদনা] কৃষি
চট্টগ্রামের কৃষির প্রধান শস্য ধান। এছাড়া শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে ব্যপক শাকসবজির চাষ হয়। উল্লেখযোগ্য শাকসবজির মধ্যে রয়েছে- বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, সাদা কুমড়া, লাউ, ঢেড়শ, ঝিংগা, চিচিংগা, শশা, বরবটি, সীম, মটরশুটি, টমেটো, মুলা, বীট, গাজর, শালগম, ফুলকপি, বাধাকপি, পটল করলা, বিভিন্ন রকমের শাক ইত্যাদি। ফলমূলের ক্ষেত্রে নারিকেলই মুখ্য। তবে, আম কলা ও কাঠালের উৎপাদনও হয়ে থাকে।
[সম্পাদনা] তামাক
১৯৬০ এর দশকে শংখ ও মাতামুহুর নদীর তীরবর্তী এলাকায় তামাক চাষ শুরু হয়।[এই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বাংলাদেশ টোব্যাকো কোম্পানি (এখন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানী) রাঙ্গুনিয়াতে তামাক চাষের ব্যবস্থা করে এবং পরে লাভজনক হওয়ায় চাষীরা তা অব্যাহত রাখে।[এই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলায় গড়ে ?? টন তামাক উৎপন্ন হয়।[এই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
[সম্পাদনা] লবন
সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় লবন চাষ লাভজনক। ইতিহাসে দেখা যায় ১৭৯৫ সালে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে গড়ে বার্ষিক ১৫ লাখ টন লবন উৎপন্ন হতো। [এই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
[সম্পাদনা] বনজ সম্পদ
[সম্পাদনা] মৎস চাষ ও আহরণ
চট্টগ্রাম জেলায় মাছচাষের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। সমুদ্র এবং নদী-নালার প্রাচূর্য এর মূল কারণ। শহরের অদূরের হালদা নদীর উৎসমুখ থেকে মদুনাঘাট পর্ষন্ত মিঠা পানির প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে বেশ উর্বর। বৃহত্তর চট্টগ্রামে দিঘী, বিল ও হাওড়ের সংখ্যা ৫৬৮,[এই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পুকুর ও ডোবার সংখ্যা ৯৫,৯৪১।[এই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মোট আয়তন ৮৫,৭০০ একর (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ১৯৮১), কর্ণফুলী নদীর মোহনায় প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার একর বিস্তৃত মাছ ধরার জায়গা হিসাবে চিহ্নিত।
রপ্তানির ক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ হাঙ্গর, স্কেট, রে, হেরিং, শার্কফিন এবং চিংড়ি উল্লেখ্য।
[সম্পাদনা] শুটকি
চট্টগ্রামের মাছ চাষ ও আহরনের একটি উল্ল্যেখযোগ্য দিক হলে শুটকি (মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করা)। সোনাদিয়া, সন্দ্বীপ প্রভৃতি দ্বীপাঞ্চল থেকে শুটকি মাছ চট্টগ্রামের বাণিজ্য কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়। ব্রিটিশ আমলে শুটকি রেঙ্গুনে রপ্তানি করা হতো।
[সম্পাদনা] শিল্প
বন্দর নগরী হিসাবে ব্রিটিশ-পূর্ব, ব্রিটিশ এবং পাকিস্তান পর্বে চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল। বন্দরভিত্তিক কর্মকান্ড ছাড়াও ব্রিটিশ আমলে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের সদর দপ্তর চট্টগ্রামে স্থাপিত হয়। পাকিস্তান পর্বে চট্টগ্রামে ভারী শিল্প যেমন - ইস্পাত, মোটরগাড়ি, পাট, বস্ত্র, সুতা, তামাক, ম্যাচ ও ঔষধ শিল্পের কারখানা গড়ে ওঠে। তাছাড়া কিছু বহুজাতিক কোম্পানির সদর দপ্তরও চট্টগ্রামে গড়ে ওঠে।
[সম্পাদনা] সংস্কৃতি
[সম্পাদনা] গণমাধ্যম
চট্টগ্রামের উল্লেখযোগ্য দৈনিক পত্রিকার মধ্যে রয়েছে দৈনিক পূর্বকোন,দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্ছ এবং দৈনিক আজাদী। বাংলাদেশ বেতারের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মূল স্টুডিও আগ্রাবাদে অবস্থিত। এছাড়া কালুরঘাটে একটি বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র রয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন এর চট্টগ্রাম কেন্দ্র পাহাড়তলীতে অবস্থিত। বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী এফএম রেডিও রেডিও টুডের চট্টগ্রাম সম্প্রচার কেন্দ্র রয়েছে।
[সম্পাদনা] শিক্ষা
চট্টগ্রাম শহরের মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয় গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল (স্থাপিত ১৮৩৬), মুসলিম হাই স্কুল, ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারী বিদ্যালয়, ডঃ খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়, আগ্রাবাদ সরকারী কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, ইত্যাদি। উল্লেখযোগ্য কলেজের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজ, সরকারী বাণিজ্য কলেজ, সিটি কলেজ এবং আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ। চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, যা শহরের ২২ কিলোমিটার উত্তরে ফতেহাবাদে অবস্থিত। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এ কারিগরি ও প্রকৌশলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা প্রদান করা হয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে রয়েছে ইউএসটিসি, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, ইত্যাদি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ চিকিৎসা শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র। এছাড়া শহরে একটি বেসরকারী মেডিকেল কলেজ ও রয়েছে।
[সম্পাদনা] চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানসমূহ
ঐতিহাসিক স্থানসমূহঃ লালদিঘী ও লালদিঘী ময়দান, আমানত শাহর দরগা, বায়েজিদ বোস্তামী, সিটি কর্পোরেশন ভবন, আদালত ভবন
পার্ক , বিনোদন ও প্রাকৃতিক স্থানঃ ফয়'স লেক, বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর, মুসলিম হল, জিয়া পার্ক।
স্মৃতিসৌধ ও স্মারকঃ শহীদ মিনার,
আধুনিক স্থাপত্যঃ
[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র
- ↑ ১.০ ১.১ Chittagong District, বাংলাপিডিয়া থেকে।
চট্টগ্রাম জেলা | |
---|---|
উপজেলা/থানাঃ আনোয়ারা | বাঁশখালী | বোয়ালখালী | চন্দনাঈশ | ফটিকছড়ি | হাটহাজারী | লোহাগড়া | মীরসরাই | পটিয়া | রাঙ্গুনিয়া | রাউজান | সন্দ্বীপ | সাতকানিয়া | সীতাকুণ্ড | | |
শহরাঞ্চল: আগ্রাবাদ | নাসিরাবাদ | পাথরঘাটা | নালাপাড়া | পতেঙ্গা | হালিশহর | পাঁচলাইশ | বহদ্দারহাট |